৫.৫ রিকটার স্কেলের ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল পুরো বাংলাদেশ।
২১.১১.২০২১ রোজ শুক্রবার, সকাল ১০.৩৬ মিনিটের দিকে হঠাৎ করেই ৫.৫ রিকটার স্কেলের ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল পুরো বাংলাদেশ। মাত্র কয়েক সেকেন্ডের কম্পন হলেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে রাজধানীসহ দেশের নানা প্রান্তে। ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদীর পলাশ–মাধবদী এলাকায়, যেখানে ভূকম্পনটি সবচেয়ে তীব্রভাবে অনুভূত হয়। আচমকা কম্পনের ধাক্কায় রাস্তাঘাট, অফিস-আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে মানুষ ছুটে বেরিয়ে আসে খোলা স্থানে। অনেকে ভেবেছিলেন—আরেকটি বড় বিপর্যয় নেমে এলো কি না।
নরসিংদীর পলাশ, ঘোড়াশাল ও মাধবদী এলাকায় ঘরবাড়ির দরজা-জানালা প্রচণ্ড শব্দে কেঁপে ওঠে। মুহূর্তেই মানুষ আতঙ্কে বাইরে ছুটে আসে। অনেকে জানিয়েছেন, “হৃদস্পন্দন বেড়ে গিয়েছিল, দাঁড়িয়ে থাকতে কষ্ট হচ্ছিল।” সেখানে পুরনো কিছু ভবনে সামান্য ফাটল দেখা গেছে বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে।
ঢাকায়ও ভূমিকম্পটি স্পষ্ট অনুভূত হয়। উচ্চ ভবনের বাসিন্দারা হঠাৎ মাথা ঘোরা অনুভব করেন, অনেকেই লিফট ব্যবহার বন্ধ করে সিঁড়ি দিয়ে নেমে যান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে ভূমিকম্প অনুভবের খবর, যা আতঙ্ককে আরও বাড়িয়ে দেয়। চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, গাজীপুর, টাঙ্গাইলসহ বিভিন্ন এলাকায় বাড়িঘরের জিনিসপত্র নড়ে ওঠার ঘটনাও পাওয়া গেছে।
ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প বারবার অনুভূত হওয়া ভূগর্ভস্থ ফাটল সক্রিয় থাকার ইঙ্গিত দিতে পারে। তবে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর না থাকায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন তারা। তবুও ভবিষ্যতে আরও সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এদিকে, সাধারণ মানুষের মধ্যে নতুন করে সচেতনতার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। অনেকে বলছেন, “আমরা জানিই না ভূমিকম্প হলে কী করা উচিত।” বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন ভবনগুলোর নিরাপত্তা পরীক্ষা, জরুরি বহির্গমন পথ নিশ্চিতকরণ এবং পরিবারে ছোটখাটো প্রস্তুতি থাকার।
ভয়াবহতার মাঝেও একটি সত্য আবারও সামনে এসেছে—প্রাকৃতিক দুর্যোগ কখনোই পূর্বাভাস দিয়ে আসে না। তাই সতর্কতাই একমাত্র অস্ত্র। গতকালের ভূমিকম্পে বড় ক্ষতি না হলেও এটি একটি স্পষ্ট সতর্কবার্তা—যে মুহূর্তে চাই, প্রকৃতি আমাদের অপ্রস্তুত অবস্থায় ধরতে পারে।